সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামের ফিড পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এআই সতর্কবার্তায়; এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এআই পোস্টগুলো লেবেল করার পদ্ধতি নতুন করে “মূল্যায়ন” করছে প্ল্যাটফর্মটির মালিক কোম্পানি মেটা।
অন্যান্য শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানির মতো, মেটাও একটি সতর্কতা লেবেল যোগ করে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে এআইয়ের তৈরি ছবি বা লেখা পোস্ট করার অনুমতি দিচ্ছে।
কোম্পানির নির্বাহীরা এটিকে কার্যকর উপায় হিসেবে দেখছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। তারা বলেছেন, এটি মানুষকে এআই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি পোস্টের বাস্তবতার বিষয়ে দর্শকশ্রোতারা যেন সচেতন হন সেটিও নিশ্চিত করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য মেটা প্ল্যাটফর্ম পোস্টে সতর্কতা লেবেল যোগ করার ফিচার চালু করা হয়, যা নির্দেশ করে নির্দিষ্ট কোনো পোস্ট অথবা ছবি “এআই দিয়ে তৈরি” ছিল। এ লেবেলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি হয়। পাশাপাশি, কেউ পোস্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করলে নিজে থেকেই এ সতর্ক বার্তা যোগ করার সুযোগ পান এ ফিচারের মাধ্যমে।
তবে, সম্প্রতি আলোকচিত্রী ও অন্যান্য ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা বলছেন, এআই প্রযুক্তির সামান্য ব্যবহারও তাদের পোস্টে এআই সতর্কতা লেবেল যোগ করছে। এআই টুল ব্যবহার করে, ছবির একটি পিক্সেল পরিবর্তন করাও এ সতর্কতা লেবেল যোগ হওয়ার জন্য যথেষ্ট বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
আর এতেই উঠেছে অভিযোগ। অনেকের দাবি, এর ফলে মানুষ একটি আসল ছবিকেই অবিশ্বাস করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, ফটোশপে একটি ছবির অদৃশ্য অংশ এআই টুলের সাহায্যে এডিট হলে, সেখানেও যোগ হতে পারে এআই লেবেল।
মেটা বলছে, কোম্পানিটি এমন প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এসব প্রয়োজনীয়তা পরিবর্তন করতে পারে বলেও পরামর্শ দিয়েছে তারা।
“মানুষ এআই তৈরি কনটেন্ট দেখলে সবসময় সেটি তাদের জানানোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। আমরা সম্প্রতিক প্রতিক্রিয়াগুলো বিবেচনা করছি এবং পদ্ধতির মূল্যায়ন চালিয়ে যাচ্ছি; যাতে আমাদের লেবেল একটি ছবিতে ব্যবহৃত এআই-এর পরিমাণও তুলে ধরতে পারে।” – বলেছেন মেটার এক মুখপাত্র।
“আমরা এ খাতের ভাল মানের বিভিন্ন সূচকের ওপর নির্ভর করি, অন্যান্য কোম্পানিও টুল হিসেবে তাদের কনটেন্টে যোগ করে থাকে। প্রক্রিয়াটিকে আরও উন্নত করতে এ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি, যাতে লেবেলিং পদ্ধতিটি আমাদের উদ্দেশ্যের সঙ্গে মেলে।”
অন্যান্য অনেক প্ল্যাটফর্মের মতো মেটা আংশিকভাবে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টিং’ প্রযুক্তির ওপরে নির্ভর করে, যা অ্যাডোবি ফটোশপের মতো ছবি এডিট করার অ্যাপগুলোকে আলাদা একটি ফাইলে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দেয়। এসব তথ্য নির্দেশ করে যে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এডিট করা হয়েছে। একজন দর্শক তথ্যগুলো না দেখলেও, তাদের এর মূলভাব বোঝানোর জন্য তথ্যগুলো মেটাডেটায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।