প্রয়োজনের সময় জ্বলে উঠলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। তরুণ ফরোয়ার্ড জোড়া গোলে পথ দেখালেন দলকে। প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শেষ আটের পথে এগিয়ে গেল ব্রাজিল।
বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে কোপা আমেরিকায় ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ৪-১ গোলে জেতে দরিভাল জুনিয়রের দল।
লাস ভেগাসের অ্যালিজায়ান্ট স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে দুই গোল করে জয়ের নায়ক ভিনিসিউস। একটি করে গোল করেন সাভিনিয়ো ও লুকাস পাকেতা।
স্কোর লাইন যা বলছে, ম্যাচে লড়াই হয়েছে এর চেয়ে অনেক বেশি। ৫৪ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ব্রাজিল গোলের জন্য শট নেয় ১৭টি, এর ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে প্যারাগুয়ে নেয় ১৫ শট, তাদেরও ছয়টি ছিল লক্ষ্য বরাবর।
দুই অর্ধে দুটি পেনাল্টি পেয়ে একটি কাজে লাগায় ব্রাজিল, ব্যর্থ হয় অন্যটিতে।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ব্রাজিল। গতিময় শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জোয়াও গোমেস।
নয় মিনিট পর প্রায় এগিয়েই যাচ্ছিল প্যারাগুয়ে। তবে দামিয়ান বোবাদিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান আলিসন বেকার। কোস্টা রিকার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র ম্যাচে তেমন কিছু করতে হয়নি তাকে। তবে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বেশ ব্যস্ত দিন কাটে ব্রাজিল গোলরক্ষকের।
২৩তম মিনিটে কর্নারে একটুর জন্য হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মার্কিনিয়োস। ছয় মিনিট পর আবার সুযোগ পান বোবাদিয়া। এবারও তাকে হতাশ করেন আলিসন।
৩১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন লুকাস পাকেতা। প্যারাগুয়ে মিডফিল্ডার আন্দ্রিয়ান কুবাসের হ্যান্ডবলে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে রাখতে দিয়ে শট নেন পোস্টের বাইরে!
চার মিনিট পরে শেষ হয় গোলের জন্য পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের অপেক্ষা। পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে একটু এগিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ভিনিসিউস। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি প্যরাগুয়ে গোলরক্ষক।
৪৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাভিনিয়ো। ব্রুনো গিমারাইসের শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর লাগে প্যারাগুয়ের একজন ডিফেন্ডারের পায়ে। তিনি ঠিক মতো শট নিতে না পারলে পেয়ে যান সাভিনিয়ো। বাকিটা অনায়াসেই সারেন ২০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভীষণ উত্তপ্ত হয়ে হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় ভিনিসিউস জুনিয়রকে। কয়েক মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। জবাবটা গোল দিয়েই দেন রেয়াল মাদ্রিদ তারকা।
বল ক্লিয়ার করার চেষ্টায় প্যারাগুয়ের একজন তুলে দেন ভিনিসিউসের পায়ে। অরক্ষিত ফরোয়ার্ড খুঁজে নেন ঠিকানা। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটের এই গোলে ৩-০ ববধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণাত্মক ফুটবলে ব্যবধান কমায় প্যারাগুয়ে। ৪৮তম মিনিটে দূরপাল্লার তীব্র গতির শটে পোষ্ট ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন ওমার আলদেরেতে।
তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও কমানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন জুলিও এনসিস্কো। খুব ভালো জায়গা থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠা ম্যাচে আরেকটি হ্যান্ডবলে ফের পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। ৬৫তম মিনিটে আর কোনো ভুল করেননি পাকেতা। ঠাণ্ডা মাথার শটে জাল খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার।
৭৩তম মিনিটে হ্যাটট্রিকের চমৎকার একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ভিনিসিউস। কিন্তু ডি বক্সের বাঁদিক থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
৮১তম মিনিটে অহেতুক ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন কুবাস। ১০ জনের দলে পরিণত হয় প্যারাগুয়ে।
৮৭তম মিনিটে জালে বল পাঠিয়েছিলেন প্যারাগুয়ের গুস্তাফো ভেলাসকেস। তবে অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
২ ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে ব্রাজিল। টানা দুই হারে তলানিতে প্যারাগুয়ে।
একই দিনের অন্য ম্যাচে কোস্টা রিকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে কলম্বিয়া। টানা দুই জয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে তারা। ১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা কোস্টা রিকার সম্ভাবনা বেঁচে আছে কাগজে-কলমে।