সূর্য থেকে আলো সংগ্রহের পদ্ধতিতে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন আনতে পারে নতুন এক সৌর প্রযুক্তি– এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
টেকসই ও বিভিন্ন নতুন পদ্ধতিতে শক্তি সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৌর কোষ অন্যতম প্রধান উপায় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে বেশ কিছু কারণে এগুলোর মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আলোকে সৌর কোষ দিয়ে শোষণ করার ক্ষেত্রে সঠিক রং থাকার বিষয়টি। এর পাশাপাশি, পর্যাপ্ত আলোক শক্তি শোষণের ক্ষেত্রে সৌর কোষগুলো তুলনামূলক পুরু হওয়া দরকার।
বিজ্ঞানীদের আশা, একদিন এমন একটি সৌর কোষও বানানো সম্ভব হবে, যেগুলো ‘প্যানক্রোম্যাটিক’ বা দৃশ্যমান আলোর পুরো বর্ণালী শোষণ করতে সক্ষম। এমনকি এদেরকে আরও পাতলা করে বানানোর সম্ভাবনাও আছে যাতে কোষগুলো আগের তুলনায় পাতলা ও হালকা হয়।
বিজ্ঞানীরা প্রায়শই দাবি করেন, এই সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে উদ্ভিদ ও ব্যাকটেরিয়ার আলো-সংগ্রহকারী অ্যান্টেনা। তবে এটি একটি সতর্কবার্তাও বটে। কারণ শোষিত আলোর সকল শক্তি সংগ্রহ করতে সৌর কোষগুলোয় বিভিন্ন রঙের প্রয়োজন পড়ে।
এখন গবেষকরা বলছেন, তারা নতুন এক ধরনের ‘লাইট-হারভেস্টিং’ পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন, যা আগের প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর চেয়ে একেবারে আলাদা ও সৌর কোষের সমস্যা কাটিয়ে তোলার বেলাতেও সহায়ক।
‘জুলিয়াস-ম্যাক্সিমিলিয়ানস-ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক ওয়ার্থনার বলেছেন, এর কাঠামো অনেকটা সেমিকন্ডাক্টরের মতো, যা একে ‘চোখের দৃষ্টিসীমানা জুড়ে’ আলো শোষণের সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে, এক্ষেত্রে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া রঙের ওপরও নির্ভর করতে হয়। এর মানে, একটি পাতলা স্তরে বিশাল পরিমাণ আলোক শক্তি সংগ্রহ করা যেতে পারে, অনেকটা ‘লাইট-হারভেস্টিং’ পদ্ধতির মতোই।
নির্মাতারা যে পদ্ধতিকে ‘লাইভ-হার্ভেস্টিং অ্যান্টেনা’ বলে ডাকছেন, তা চারটি ভিন্ন রং নিয়ে সেগুলোকে ভাঁজ করে যাতে রংগুলো একে অপরের সঙ্গে আঁটসাঁট হয়ে থাকে। আর যেহেতু এগুলো খুবই গোছানো অবস্থায় রাখা, তাই এগুলো থেকে খুব দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে শক্তি আদান প্রদান করা যায়।
সিস্টেমটিকে ‘ইউপিআরবি’ নাম দিয়েছেন নির্মাতারা, যা মিলে যায় চারটি এমন আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সঙ্গে, যেগুলো সেই ভাঁজ করা অতিবেগুনী, লাল, বেগুনি ও নীল রঙের উপাদানে শোষিত হয়।
এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘কেম’-এ ‘প্যানক্রোম্যাটিক লাইট-হার্ভেস্টিং অ্যান্টেনা বাই সুপারমলিকিউলার এক্সিশন ব্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফর হেটারোমেরিক ডাই ফোল্ডামের’ শীর্ষক শিরোনামে।