প্রতিবেলার খাবারের সাথে যদি জাম্বুরা বা জাম্বুরার রস খাওয়া হয় তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাড়ে চার কেজির মতো ওজন কমতে পারে।
প্রায় এক যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত থাকা এই খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে অনেকেই দাবি করেন জাম্বুরাতে থাকা এক ধরনের এঞ্জাইম চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। আর এই ফলে আঁশের পরিমাণ বেশি বলে খিদা লাগে কম। ফলে খাওয়া হয় কম।
জাম্বুরা ডায়েট বলতে যা বোঝায়
“কৌশলটা খুব সোজা”- ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন অ্যারিজোনা নিবাসী মার্কিন পুষ্টিবিদ ক্রিস্টেন কার্লি।
স্বল্প কার্ব ও উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে প্রতিবেলায়। আর প্রতিবার খাওয়ার আগে অর্ধেক জাম্বুরা গ্রহণ বা এক গ্লাস জাম্বুরার রস পান করতে হবে।
অনেকে আবার ক্যালোরির পরিমাণ কমানোর জন্য বিশেষ ধরনের খাবার বেছে নেন।
কালিং বলেন, “এই খাদ্যাভ্যাসটা মজাদার আর কার্যকর মনে হতে পারে। তবে আসল বিষয় হল- ক্যালোরি কম গ্রহণের কারণেই ওজন কমে। এখানে টক বা সিট্রাস ফলের কোনো জাদুকরী শক্তি কাজ করে না।”
উপকারিতা
জাম্বুরাতে ক্যালরি কম আঁশ বেশি। ফলে অনেকক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দিতে পারে। যে কারণে খাওয়া কম হয়। আর টক ফল হিসেবে ভিটামিন সি’তে ভরপুর। যা রোগ প্রতিরোধ শক্তিতে ভূমিকা রাখে।
তবে জাম্বুরাতে থাকা এঞ্জাইম যে চর্বি কমাতে সাহায্য সে ব্যাপারে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘স্ক্রিপ্স ক্লিনিক, লো জোলা’র পরিচালিত গবেষণার ফলাফল বলে- অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা খাওয়ার আগে অর্ধেক জাম্বুরা খেয়েছে তাদের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ওজন কমতে দেখা গেছে।
জাম্বুরা ডায়েটের ঝুঁকি
মজার মনে হলেও এই খাদ্যাভ্যাসের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে।
কার্লি বলেন, “জাম্বুরা কোনো কোনো ওষুধের ক্ষেত্রে বিরোধী আচরণ করে। বিশেষ করে কিছু অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-ধর্মী ওষুধের ওপর। এই ফলে থাকা যৌগ ওষুধ সঠিকভাবে হজম করতে দেয় না। যে কারণে রক্তপ্রবাহে ওষুধের মাত্রা বেশি থেকে যেতে পারে। যা স্বাস্থ্যের জন্য হানীকর।”
তাই কোনো ওষুধের মধ্যে থাকলে জাম্বুরা গ্রহণের ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই পুষ্টিবিদ।
পাশাপাশি এই খাদ্যাভ্যাস দ্রুত ওজন কমানোর কারণে চর্বির পরিবর্তে অতি মাত্রায় পেশির ক্ষয় করতে পারে। কারণ ক্যালোরি কম গ্রহণের কারণে দেহ শক্তি পাওয়ার জন্য পেশির কোষ ভেঙে শক্তি যোগানোর চেষ্টা করে।
পেশির পুরুত্ব ও দ্রুত ওজন কমার কারণে বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হয়। য়ে কারণে স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে ফিরে গেলে দ্রুত ওজন বেড়ে যেতে থাকে।
জাম্বুরা ডায়েট কি কার্যকর?
যদিও কারও কারও উপকার হয়। তবে উল্টো দিকটাও নজরে রাখা জরুরি।
“জাম্বুরার কোনো জাদুকরী শক্তির কারণে নয় বরং ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমানোর কারণে ওজন কমে। তাই দীর্ঘমেয়াদে এই খাদ্যাভ্যাসে থাকলে অস্বাভাবিক পেশির ক্ষয়, পুষ্টির অভাব ও বিপাক প্রক্রিয়াতে সমস্যা দেখা দিতে পারে” বলেন কার্লি।
এছাড়া যে কোনো ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমানো হলেও, স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে ফিরলে আবার ওজন বেড়ে যায়।